গুগল সার্চের প্রয়োজনীয় সেটা কিছু টিপস এবং দ্রুত তথ্য
ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে পাওয়া মানে গুগল সার্চ। এটি সবার প্রথম পছন্দ। তথ্যের সমুদ্রে নিজের প্রয়োজনীয় মুক্তো খুঁজে পেতে গুগলের বিশেষ কিছু টিপস জানা থাকা দরকার। এই টিপসগুলি শুধু আপনার সময় বাঁচাবে না, অনুসন্ধানের ফলাফল গুলিকে আরো প্রসঙ্গে এবং নির্দিষ্ট করে তুলবে। আমরা আপনাকে সেই সব গুগল সার্চ টিপস শিখাবো যা আপনাকে অনলাইনে একজন দক্ষ খোঁজার সন্ধানীতে পরিণত করবে। আপনি যদি সহজে এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে চান।
এই ব্লগ পোস্টে আপনার জন্য। এখানে আমরা সেরা কিছু গুগল সার্চ টিপস নিয়ে আলোচনা করব যা আপনার অনলাইন অনুসন্ধানকে আরো ফলপ্রসূ এবং সহজ করে তুলবে।
পোস্টসূচীপত্রঃ
গুগল সার্চের মৌলিক পরিচিতি
গুগল সার্চ ইঞ্জিন বর্তমান ডিজিটাল যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও অতি ব্যবহৃত একটি টুল, যা প্রতিদিন লক্ষ কোটি মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে ব্যবহার করে। এটি মূলত একটি সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম, যা ইন্টারনেটে থাকা কোটি কোটি ওয়েপ পেজ স্ক্যান করে ব্যবহার কারীর চাহিদা অনুযায়ী সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য তুলে ধরে। ব্যবহারকারীরা গুগলে প্রশ্ন, শব্দ বা বাক্যাংশ লিখে যে কোন বিষয়ে মুহূর্তেই তথ্য জানতে পারে। এটি শুধুমাত্র লেখা নয়, বরং ছবি, ভিডিও, মানচিত্র এবং খবর সহ নানা ধরনের কনটেন্ট সার্চ এর সুবিধা দেয়। এর সহজ ইন্টারফেস এবং দ্রুত ফলাফল প্রদানের ক্ষমতা গুগলকে বিশ্বের শীর্ষ সার্চ ইঞ্জিনে পরিণত করেছে।
গুগল সার্চের পেছনে কাজ করে জটিল অ্যালগরিদম, যা ব্যবহারকারীর সার্চ ট্যাম বিশ্লেষণ করে এবং কোন ওয়েব পেজের সেই তথ্য রয়েছে তা খুঁজে বের করে। এই অ্যালগোরিদম বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তিক করে রেংকিং নির্ধারণ করে, যেমন ওয়েব পেজের মান, জনপ্রিয়তা, কনটেন্টের প্রশান্তিকতা, কিওয়ার্ডয়ের উপস্থিতি, ওয়েবসাইটের স্পিরিট ইত্যাদি। এতে করে ব্যবহারকারীরা সর্বোত্তম ফলাফল পেতে পারে। সার্চের ফলে একাধিক ওয়েবসাইটের লিংক আসে, যেখান থেকে ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনীয় অনুযায়ী তথ্য নিতে পারে। এই সংক্রিয় বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় গুগলকে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে আলাদা করে।
গুগল সার্চ শুধুমাত্র তথ্য খোঁজার মাধ্যমে নয়, বরং এটি আজকের দিনের শিক্ষা, ব্যবসা, গবেষণা, বিনোদন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার অন্যতম উৎসের পরিণত হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী তার পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন খুঁজে পাই, ঠিক তেমনি একজন ব্যবসায়ী ও তার মার্কেট রিচার্জ এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করে নিতে পারেন। এমনকি সাধারণ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর যেমন রান্নার রেসিপি, স্বাস্থ্য টিপস, খাবরাখাবর সবাই এখানে পাওয়া যায়। এছাড়াও Google voice search এবং image search এর মত ফিচার সার্চকে আরও সহজ করে তুলেছে।
বর্তমানে গুগল সার্চ এর ব্যবহার এতটাই বিস্ত্তত যে অনেক সময় মানুষের কোন কিছুর উত্তর জানার পরিবর্তে সরাসরি গুগল সার্চে দেখা শব্দটি ব্যবহার করে। এটি মানুষের প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে, গুগল থেকে তথ্য গ্রহণ করার সময় যাচাই-বাছাই করা জরুরী, কারণ এসব তথ্য সঠিক ও নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য আইন ও আর্থিক বিষয়ে তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সঠিকভাবে কিওয়ার্ড নির্বাচন, নির্ভুল বানান এবং স্পেসিফিক প্রশ্ন করলে সার্চের মান উন্নত হয়। তাই গুগল search এর বৃদ্ধি দীপ্ত ব্যবহার একজন ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে আমাদের জন্য অপরিহার্য।
কিওয়ার্ড বাছাই ও ব্যবহার
একটি কার্যকর অনলাইন কনটেন্ট বা ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল গঠনে কিওয়ার্ড ভাষায় ও ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কিওয়ার্ড মূলত এমন কিছু শব্দ বা বাক্যাংশ যা মানুষ ইন্টারনেটে কোনো কিছু খোঁজার সময় সার্চবারে লিখে। সঠিক কেউ আর নির্বাচন করতে পারলে আপনি আপনার কনটেন্ট বা পণ্যটি সহজেই লক্ষ্য পাঠক বা ভোক্তার সামনে তুলে ধরতে পারবেন। এজন্য প্রথমে বুঝতে হবে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কি ধরনের তথ্য খুঁজছে এবং কি ভাষায় তা অনুসন্ধান করছে। ব্যবহারকারীর চাহিদা এবং ইন্টারেস্ট বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত কিওয়ার্ড বাছাই করলে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনে আপনার কনটেন্ট ভালোভাবে রেঙ্ক করতে সক্ষম হয়।
সঠিক কিওয়ার্ড বাছাই করার জন্য বর্তমানে অনেক টুলস রয়েছে যেমন Google keyboard planner, ubersuggest, ahrefs ইত্যাদি, যেগুলোর মাধ্যমে কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম, প্রতিযোগিতা এবং প্রাসঙ্গিকতা জানা যায়। এসব টোল ব্যবহার করে আপনি জানতে পারবেন কোন শব্দগুলো বেশি সার্চ হচ্ছে এবং কোনগুলোর প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। এই তথ্য অনুযায়ী আপনি আপনার কনটেন্ট এর জন্য দীর্ঘ অথবা সংক্ষিপ্ত টার্গেট কিওয়ার্ড নির্ধারিত করতে পারবেন। অনেক সময় Long-tail keyword, অর্থাৎ দীর্ঘ বাক্যবিশেষ কিওয়ার্ড বেঁচে নিলে কম প্রতিযোগিতায় ভালো ফল পাওয়া যায়, কারণ এগুলো আরো নির্দিষ্ট ও ক্রেতা মনস্ক।
কি ওয়ার্ড শুধুমাত্র নির্বাচন করলে যথেষ্ট নয়, বরং সেগুলো কিভাবে কনটেন্ট সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় তা গুরুত্বপূর্ণ। কনটেন্টের শিরোনামে, প্রথম অনুচ্ছেদে, সাব হেডিংয়ে এবং মাঝে মাঝে লেখার মধ্যে কিওয়ার্ড সংযুক্ত করলে তা সার্চ ইঞ্জিনে দৃশ্যমানতা বাড়াতে সহায়ক হয়। তবে কীওয়ার্ড বা অতিরিক্ত পুনরাবৃত্তি করা উচিত নয় কারণ এতে পাঠকের অভিজ্ঞতা খারাপ হয় এবং গুগল ও নেতিবাচক ভাবে রেঙ্ক করতে পারে। কিওয়ার্ড ব্যবহারের সময় প্রসঙ্গিকতা, প্রাকৃতিকভাবে লেখা এবং পাঠকবান্ধাবতা বজায় রাখা উচিত।
বর্তমান সময়ের কনটেন্ট মার্কেটিং ও এসইও কৌশলে কিওয়ার্ড ব্যবহারের কৌশল প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। শুধু কিওয়ার্ড নয়, এখন গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য ( Search intent) বোঝে এবং সেই অনুযায়ী ফলাফল দেখায়। তাই এখন কনটেন্ট লিখতে গেলে শুধু কিওয়ার্ড নয়, পাঠকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দক্ষতা থাকতে হয়। আপনার কনটেন্ট যদি ভিজিটরের জিজ্ঞাসা সমাধান দিতে পারে, তাহলে তা google আগ্রাধিকার দেই। এজন্য কিওয়ার্ড বেছে নেওয়ার পাশাপাশি তার প্রাসঙ্গিক উপকরণ এবং বিশ্লেষণধর্মে ব্যাখ্যা যুক্ত করা ও অপরিহার্য। এতে সার্চ রেংকিং যেমন বাড়ে, তেমনই পাঠকের আস্থা ও তৈরি হয়।
উদ্ধৃতি চিহ্নের ব্যবহার
উদ্ধৃতি চিহ্ন, যা বাংলায় সাধারণত উদ্ধারণ চিহ্ন, কোটেশন মার্ক হিসেবে পরিচিত, ভাষাকে আরও স্পষ্ট ও বোধগম্যকরে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লেখালেখিতে যখন কোন ব্যক্তি সরাসরি বক্তব্য, সংলাপ বা বিশেষ কোনো শব্দ বা ব্যাখ্যাংশ আলাদা করে তুলে ধরার প্রয়োজন হয়, তখন উদ্ধতি চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এটি পাঠককে বোঝাতে সাহায্য করে যে উক্ত শব্দ বা বাক্যটি মূল লেখক এর নয়, বরং অন্য কোন উৎস থেকে নেওয়া। বিশেষ করে সাহিত্য, গবেষণা, সাংবাদিকতা ও একাডেমিক লেখায় উদ্ধৃতি চেনের ব্যবহার এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন, সরাসরি বলা কথা লিখতে গেলে সম্পূর্ণ বক্তব্যটিকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে আবদ্ধ করতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ, যদি বলা হয় , রুবি বলল, আমি আজ বইমেলায় যাব, তাহলে এখানে রুবির বক্তব্য উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখতে হবে। এছাড়া, কোন শব্দের বিশেষ গুরুত্ব বোঝাতে অথবা শব্দটিকে অন্যরকম অর্থে বা রুপক অর্থে ব্যবহার করতে হলেও উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার লেখার গঠনগত সৌন্দর্য ও পেশাদারিত্র বৃদ্ধি করে।
অনেক সময় উদ্ধৃতি ব্যবহার করতে হলে একক উদ্ধৃতি চিহ্ন (' ') ব্যবহার করতে হয়। উদাহরণস্বরুপ: শিক্ষক বললেন "সokrates বলেছিলেন, নিজেকে জানো। এভাবে ভেতরের বক্তব্যের এর জন্য একক উদ্ধৃতি এবং বাইরের বক্তব্যের জন্য দ্বিগণ উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহারের রীতি রয়েছে। উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহারের যত্নবান হতে হয়, কারণ ভুলভাবে উদ্ধৃতি বসালে পাঠক বিভ্রান্ত হতে পারে। তাই বক্তব্যের শুরু ও শেষ সঠিকভাবে চিহ্নিত করা অত্যন্ত জরুরী।
বর্তমান সময়ে উদ্ধৃতি চিহ্নের ব্যবহার শুধু বই বা প্রবন্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, মেসেজিং, ব্লগ ও অনলাইন নিউজ লেখাতেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সঠিক উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে লেখার মান বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি পাঠকের প্রতি লেখক এর পেশাদারিত্রের ছাপ পরে। উদ্ধৃতি চিহ্নের যথাযথ ব্যবহার ভাষার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং বার্তার স্পষ্টতা নিশ্চিত করে। তাই লেখালেখির সময় উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহারের সতর্ক থাকা এবং তার নিয়মাবলী যথাযথভাবে অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরী।
বিশেষ চরিত্র ও অপারেটর প্রয়োগ
গুগল সার্চ এর সঠিক ফলাফল পেতে বিশ্বের চরিত্র ও অপারেটর প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরী। এই চরিত্র ও অপারেটর গুলি সার্চের নির্দিষ্টতা বাড়িয়ে তোলে, যা আমাদের কাঙ্খিত তথ্য দ্রুত এবং সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। অপারেটর হল google search এর বিশেষ কিওয়ার্ড বা চিহ্ন। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার করলে ঠিক সে শব্দ বা ব্যাক্যাংশ খোঁজা হয়। মাইনাস (-) কেন ব্যবহার করে অবাঞ্ছিত ফলাফল বাদ দেয়া সম্ভব।
অ্যাডভান্স সার্চ কৌশলের মাধ্যমে সার্চ এর দক্ষতা বাড়ানো যায়। সাইট (Site:) অপারেটর দিয়ে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মধ্যে সার্চ করা যায়। তারক চিহ্ন(ব্যবহার করে অজানা শব্দ বা ফ্রেজের জায়গায় সার্চ করা সম্ভব।
অ্যাডভান্স সার্চ কৌশল ব্যবহার করে আপনি যে কোন তথ্য আরও সঠিক, প্রসঙ্গিক এবং দ্রুত খুঁজে পেতে পারেন। সাধারন সার্চের চেয়ে এসব কৌশল অনেক বেশি কার্যকর, কারণ এটি আপনাকে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুক দিকে সরাসরি নিয়ে যায়। যেমন আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট বাক্যাংশ খুঁজতে চান, তাহলে সেটি উদ্ভিত্তি চেনের মাধ্যমে লিখে সার্চ ইঞ্জিন শুধু সেই নির্দিষ্ট বাক্যাংশ যুক্ত ফলাফল দেখাবে।
Site অপারেটর ব্যবহার করে শুধুমাত্র সেই সাইটে থাকা বিষয়বস্তুগুলো খুঁজতে পারেন একইভাবে Filetype অপারেটর দিয়ে আপনি PDF, DOC, PPT ইত্যাদি নির্দিষ্ট ফাইল টাইপের তথ্য খুঁজে বের করতে পারেন। কিছু বিষয় বাদ দিতে চাইলে আপনি শব্দের আগে মাইনাস (-) চিহ্ন ব্যবহার করে সেই বিষয়বস্তু এড়িয়ে যেতে পারেন। যদি একাধিক বিকল্প বিষয়ে খুজতে চান, তাহলে Qr অপারেটর ব্যবহার করে সার্চ করতে পারেন তাহলে তথ্য পেয়ে যাবেন।
intitle ও inurl: অপারেটরের মাধ্যমে আপনি এমন পেজ খুঁজে পেতে পারেন যেগুলো শিরোনাম বা লিংকে নির্দিষ্ট শব্দ রয়েছে। গুগলেরTools অপশন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট বয়স সীমার মধ্যে প্রকাশিত তথ্য ও খুঁজে পাওয়া সম্ভব আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হল ওয়ার্ল্ড কাড * ব্যবহার, যা কোন অজানা শব্দ বা পরিবর্তনশীল অংশকে রিপ্লেস করার জন্য ব্যবহার হয়। এসব কৌশল একত্রে ব্যবহার করলে আপনি খুব সহজে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোত্তম তথ্য খুঁজে পেতে পারেন।
সাইট স্পেসিফিক সার্চ
ইন্টারনেটে তথ্যের সমুদ্র নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পেতে সাইট স্পেসিফিক সার্চ অপরিহার্য। এটি গুগলের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মধ্যে সঠিক তথ্য খুঁজে পাওয়ার এক অসাধারণ উপায়। এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে, আপনি সহজেই যে কোন ওয়েবসাইটের মধ্যে বিশেষ তথ্য খুজে পেতে পারেন।
একটি ওয়েবসাইটের মধ্যে সার্চ প্রথমে, গুগলে সাইট: টাইপ করে সার্চ দিন। এরপর ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং খুঁজতে চাওয়া শব্দ বা ব্যক্ত লিখুন। এটি গুগলকে নির্দেশ দেয় শুধু সেই ওয়েবসাইটের মধ্যে তথ্য খুঁজতে।
সাইট সার্চের ট্রিকস, সাইট সার্চের ক্ষেত্রে, শব্দ বাছাই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে আরো সঠিক ফলাফল দেবে। আরেকটি ট্রিক হল উদ্ধতি চিহ্নের মধ্যে খুঁজতে যাওয়া ব্যাক্য রাখা। এটি গুগলকে সেই নির্দিষ্ট ব্যর্থ খুঁজতে বলে।
এই ধরনের সার্চ করতে হলে গুগলের সার্চ বক্সে site: লিখে ওয়েবসাইটের নাম লিখতে হয়, তারপর যেটা খুঁজতে চান সেটা লিখতে হয়। উদাহরণস্বরূপ যদি কেউ প্রথম আলো ওয়েবসাইটের অর্থনীতি বিষয়ক কিছু খুঁজতে চাই, তাহলে তাকে লিখতে হবে: site:prothmalo.com অর্থনীতি।
এভাবে গুগল শুধু সেই নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে ফলাফল দেখাবে, অন্য কোন সাইট থেকে নয়। এটি দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাঙ্খিত তথ্য খুঁজে পাওয়ার উপায়।
ফাইল টাইপ অনুযায়ী সার্চ
ইন্টারনেটে তথ্যের সমুদ্র নির্দিষ্ট ফাইল টাইপ দ্রুত খুঁজে পেতে google সার্চ একটি অপরিহার্য টুল। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, পিডিএফ, বা ইমেজ ফাইল খুঁজে পেতে গুগলের অন্যান্য সার্চ ফিচার গুলি সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। সাইড স্পেসিফিক সার্চ এর মাধ্যমে নির্ভুলভাবে এবং দ্রুত কাঙ্খিত তথ্য পাওয়া যায়, কারণ এটি তথ্য ক্ষেত্রকে সীমিত করে শুধু প্রসঙ্গিক ফলাফল দেখায়। বিশেষ করে বড় বড় ওয়েবসাইট ,যেমন সংবাদমাধ্যম, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে বের করতে এটি অত্যন্ত উপযোগী।
আপনি চাইলে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে যে কোন সাইট থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক তথ্য সহজে খুঁজে পেতে পারেন।ফাইল ফরম্যাট ফিল্টারিং হল একটি প্রসেস যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ধরনের ফাইল নির্বাচন বা বাদ দেয়া যায়। এটি মূলত সফটওয়্যার, অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত হয় যেখানে ব্যবহারকারী শুধু নির্দিষ্ট ফরম্যাটের ফাইল দেখতে বা আপলোড করতে চাই। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি শুধু :jpg বা .png ফরমেট এর ছবি দেখতে চাই তাহলে ফিল্টার ব্যবহার করে অন্য ফরম্যাট গুলো বাদ দিতে পারে।
ফাইল ফরম্যাট হল ডাটা ম্যানেজমেন্ট কে সহজ করে তোলে এবং অপ্রয়োজনীয় ফাইল থেকে মুক্ত রাখে। বিশেষ করে বড় আকারের ফোল্ডার বা সার্ভারে কাজ করার সময় এটি খুবই কার্যকর। অনেক সময় ব্যবহারকারী এমন কিছু খুঁজতে চান যেটা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এক্সট্রেশনের অন্তর্ভুক্ত। এ অবস্থায় ফাইল ফরমেট ফিল্টার ব্যবহার করে, pdf. docx. xlsx, ইত্যাদি আলাদাভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কেউ যদি কেবলমাত্র ওয়ার্ড ডকুমেন্ট চাই, সে তখন, docx ফিল্টার চালু করতে পারে। এতে সময় বাঁচে এবং প্রয়োজনীয় ফাইল দ্রুত পাওয়া যায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ফাইল সার্চ আরো নির্ভুল ও কার্যকর হয় ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও উন্নত হয়।
সময় ও তারিখ অনুসারে তথ্য খোঁজা
গুগলের সঠিক তথ্য পেতে সময় ও তারিখ অনুযায়ী ফিল্টার করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়সীমা নির্ধারণ করে খোঁজ ফলাফল আরো প্রাসঙ্গিক হয়। সময় ও তারিখ অনুসারে তথ্য খোঁজা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর উপায়, বিশেষ করে যখন তথ্যের পরিমাণ অনেক বেশি হয় ডিজিটাল যুগে প্রতিদিন ডেটা তৈরি হচ্ছে, এবং সেগুলোকে সময়ের ভিত্তিতে সাজিয়ে খোঁজা খুবই দরকারি। যেমন ধরো, কোন সংবাদের প্রকাশকাল বা কোন ইমেইলের তারিখ অনুযায়ী কিছু খুঁজে বের করা সহজ হয়। এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে দ্রুত ও সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যায়।
সময়সীমা সেট করে সার্চ করার সুবিধা হল, আপনি এক বিশাল তথ্যভান্ডার নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজনীয় তথ্য বেছে নিতে পারেন। এই পদ্ধতিতে সার্চ করলে অপ্রাসঙ্গিক ও পুরনো তথ্যগুলো বাদ চলে যায়। বিশেষ করে যখন কোন ঘটনার সময়কাল জানা থাকে, তখন সেটি খুব দ্রুত খোঁজে বের করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে একই বিষয়ের অনেক সংস্কারণ থাকে, তাই সময়ের ভিত্তিতে সর্বশেষ বা প্রাথমিকতা আলাদা করা জরুরী। সময়সীমা ঠিক করে দিলে সার্চ আরো বেশি নির্ভুল হয়ে ওঠে।
সর্বশেষ তথ্য প্রাপ্তি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা বা আপডেট সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে গেলে, Past hour, Past 24 hours, বা Past week, এর মত অপশন খুবই কার্যকর। এতে করে আপনি সর্বশেষ তথ্যগুলোই পেতে পারবেন, বা আপনার গবেষণা বা জানার ইচ্ছা কে আরো সঠিক দিশা দেবে। এই সার্চ টিপসগুলির মাধ্যমে আপনি নিজেই সময় বাঁচানোর পাশাপাশি google সার্চের দক্ষতাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারবেন। তাহলে, আপনি কি এই টিপসগুলি আগে থেকে জানতেন নাকি এবার প্রথম জানলেন এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনি সবকিছু আপডেট পেয়ে যাবেন।
গুগল সার্চের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা
গুগল সার্চ আমাদের জীবনের এমন এক অংশ হয়ে গেছে, যেখানে প্রতিদিনের সব কৌতূহল জমা রাখি। কিন্তু এই সার্চের পিছনে রয়েছে এক বিশাল ডাটা সংগ্রহ ব্যবস্থা, যা আমাদের তথ্য ধরে রাখে। ব্যবহারকারীর নাম, লোকেশন, আগ্রহের বিষয়-সবই google লগ করে। এ কারণে অনেক সময় প্রশ্ন ওঠে, আমাদের চার্জ কতটা ব্যক্তিগত থাকে। বাস্তবে, আমরা যা খুঁজি তাই আমাদের প্রোফাইল করতে ব্যবহার হয় গুগল আমাদের সুবিধার জন্য কাস্টমাইজড রেজাল্ট দেয়, কিন্তু এর মানে হলো তারা আমাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানে।
Google আমাদের এই ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে সংরক্ষণ করছে, সেটা আমাদের জানা জরুরী। অনেক সময় ব্যবহারকারীরা না জেনে তাদের সার্চ হিস্টরি গুগলের সার্ভারে রেখে দেয়। এতে করে ভবিষ্যতে সেই ডাটা বিজ্ঞাপন বা অনলাইনসিসে ব্যবহৃত হতে পারে। এ ধরনের তথ্য ব্যবহারের প্রাইভেসি হুমকির মুখে পড়তে পারে। তবে গুগল এখন অনেকটাই স্বচ্ছ নীতিমালা দেখে এগিয়েছে, এবং ইউজারদেরকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দিয়েছে। ব্যবহারকারীরা চাইলে search history বন্ধ রাখতে পারেন, বা নির্দিষ্ট সময় পরপর অটো ডিলিট চালু করে রাখতে পারেন। গুগল যদিও বলে সব তথ্য নিরাপদে রাখা হয় তবুও ব্যবহারকারীর সচেতনতা সব সময় জরুরী।
গুগলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক উন্নত, যাতে তথ্য চুরি বা মিস ইউজের ঝুঁকি কমে। মাল্টি ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন এন্ড ক্রিপসন ও ব্রাউজার সিকিউরিটি নিয়মিত আপডেট এর মাধ্যমে তথ্য রক্ষা হয়। কিন্তু যেহেতু সবকিছুই অনলাইনে চলে, তাই ১০০% নিশ্চিহাতা কখনোই দেওয়া যায় না। গুগল যতই নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক, একাংশ দায় আমাদেরও নিতে হয়। নিজের একাউন্টের পাসওয়ার্ড মজবুত রাখা, অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা, এসব ব্যক্তিগত সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্চের সময় গোপনীয়তা রক্ষা করতে চাইলে আরো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়। যেমন, ব্রাউজারের লোকাল হিস্টোরিতে তথ্য জমা হয় না। বরং নিজের তথ্যের উপর নিজের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ মন্তব্য
আমাদের আজকের আলোচনা থেকে আশা করে গুগল সার্চ করার সময় কিভাবে আরো ভালো ফলাফল পেতে হয় তা শিখতে পেরেছেন। সহজ ভাষায় লেখা এ টিপস গুলি মেনে চললে তথ্য খুঁজে পাওয়া আরও সহজ হবে। সার্চ ইঞ্জিনের কার্যক্রণালী বুঝে নেওয়া এবং সঠিক কি ওয়ার্ডের ব্যবহার আপনাকে সঠিক তথ্য দেখে নিয়ে যাবে। তাই, এই টিপসগুলি মনে এবং প্রয়োজনে পুনরায় পড়ে নিন। আপনার সার্চ অভিজ্ঞতা সহজ, দ্রুত ফলপ্রসূ হোক, এই কামনা করি।
ডোট ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url